আত্মবিশ্বাস একটি শক্তিশালী শব্দ । বলা হয়ে থাকে কোনো কাজে যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে আপনি পারবেন, তাহলে ধরে নেওয়া যায় অর্ধেক কাজটিই হয়ে গেছে । কিন্তু অধিকাংশ সময়ে আমরা হীনমন্যতায় ভুগি এর ফলে আমাদের আত্মবিশ্বাসের লেভেল একেবারে নিচে নেমে যায় । এবং তখনই আমরা কোনো কাজ ঠিকঠাক মতো করতে পারি না ।
এই পর্বে Bangla Online Portal অভিযাত্রী অবলম্বনে আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলবো, আত্মবিশ্বাস কি? কীভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠা যায়- তা নিয়ে সহজ কিছু পরামর্ষ উপস্থাপন করবো ।
আত্মবিশ্বাস বরং এটাই বুঝতে পারা যে, আপনাকে অন্য কারো সাথে তুলনা করার দরকার নেই ।
আত্মবিশ্বাস ! আপনি ঘরে বসে বসে ভাবছেন, আপনিই অন্যদের চেয়ে সেরা- ব্যাপারটা কিন্তু এমন না মোটেও । আত্মবিশ্বাস বরং এটাই বুঝতে পারা যে, আপনাকে অন্য কারো সাথে তুলনা করার দরকার নেই । এমনকি অন্যের সাথে নিজেকে তুলনায় যাওয়া, এটা আত্মবিশ্বাস জাগানোর কোন পদ্ধতিও নয় ।
এখানে তুলনার জায়গা নেই । মানুষের মধ্যে কোনো তুলনা হয় না । আপনি কারো থেকে নিচেও না, উপরেও না- এটাই আত্মবিশ্বাস !
যখন আপনি আপনার জীবনে ঠিক এমন এক অবস্থানে আসতে পারবেন, যেখানে অন্য কারো সাথে কোনো তুলনা থাকবে না, কিন্তু আপনিই সেরা- সেটা অন্যের সাথে নয়, বরং নিজের সাথে তুলনায় সব থেকে ভাল অবস্থানে আছেন- এটাই আত্মবিশ্বাস !
একটা কথা মনে রাখা উচিত- এখন, এই মুহূর্তে আপনি হয়ত সেরা, কারণ সেখানে এখন আপনিই সব থেকে ভাল- কিন্তু আপনাকে এখনই আপনার মানসিকতায় একটা পরিবর্তন অবশ্যই নিয়ে আসতে হবে ।
কাউকে দেখানো ছাড়াই, আপনি জানেন যে, আপনিই সেরা ।
আত্মবিশ্বাস অনেকভাবেই অর্জন করা যেতে পারে, শুরু হতে পারে আপনার বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে । আচ্ছা ধরুন, যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হতো, ‘আত্মবিশ্বাসীরা দেখতে কেমন হয়?’
আপনি কি এর কোন উত্তর দিতে পারতেন?
– অবশ্যই পারতেন ।
-তারা দেখতে দৃঢ়, নিজেদের প্রতি একটা সুনিশ্চিত ভাব!
তাদের দাঁড়ানোর ভঙ্গী কেমন?
-তারা সোজা হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় । তাদের পিঠ তির্যক খাঁড়া । তারা চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে ।
এখন একজন লাজুক অথবা অন্তর্মুখী স্বভাবের কেউ বলে ফেলতে পারেন, ‘হ্যাঁ ! ঠিকই আছে । আপনি যা বলছেন, তা সব চটপটে ও প্রাণবন্তদের ক্ষেত্রেই ঠিক । যারা নিজেদের ঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারে, উপস্থাপন করতে পারে, কিন্তু আমি তো ওদের মতো না । আমি কখনোই আত্মবিশ্বাসী হতে পারবো না ।‘
যে কেউ, হ্যাঁ, আমি আবারো বলছি- যদি চান যে কেউ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারেন । তবে কাউকে কাউকে হয়ত তুলনামুলকভাবে একটু বেশি কষ্ট করতে হবে অন্যদের চেয়ে- এটাই পার্থক্য ।
কারণ, আত্মবিশ্বাসহীনতায় তারা তাদের জীবনকে একটা অস্বচ্ছ দুর্বল সীমাবদ্ধতার দেয়ালের মধ্যে আঁটকে ফেলেছে- কিন্তু যে কেউ এই দেয়াল ভেঙ্গে আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারেন ।
একটু ভাবুন তো, বেশিরভাগ লাজুক ও অন্তর্মুখী মানুষও কিছু কিছু মুহূর্তে- হয়ত তাদের বিশ্বস্ত মানুষদের সাথে- যেমন পরিবার, বন্ধু অথবা জীবনসঙ্গী, এদের কাছে নিজেকে পুরোপুরি প্রকাশ করতে পারে- তাদের মধ্যে সেই সময়ে বিন্দুমাত্র জড়তা অথবা সঙ্কোচ থাকে না ।
পড়ুন- মানসিক চাপ কমানোর ১০ টি উপায়
এর থেকে কি বোঝা যায়?
জড়তা, নিজেকে গুটিয়ে রাখা, ব্যাপারগুলো আসলে পুরোপুরি নিজে থেকে গ্রহণ করা অভ্যাস । এগুলো স্বনির্বাচিত স্বভাব । অর্থাৎ- যদি ইচ্ছা থাকে সচেতনভাবেই আপনি স্থায়ীভাবে আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন । আপনি যা চান- চাইলে সেটাই করতে পারেন ।
আজকেই খুলে ফেলুন সেই অপার সম্ভাবনার মানুষটিকে আঁটকে রাখা দরজাটি ।
আত্মবিশ্বাসী হওয়ার অর্থ এটা না যে, আপনি খুব হইচই করে জমিয়ে তুলতে পারেন সবকিছু । এমন না যে, আপনাকে সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে হবে । আত্মবিশ্বাস আসলে ঠিক তার বিপরীত । যার অর্থ- কাউকে দেখানো ছাড়াই, আপনি জানেন যে, আপনিই সেরা ।
বলতে পারেন এটি একটি নিরব জয় । একটি সুন্দর ও শান্ত বিজয় ।
যদি মনে করেন, আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাব- আপনি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারেন । আপনার যা কিছুই সীমাবদ্ধতা থাক না কেন, আপনি তা অর্জন করতে পারেন ।
আপনার ব্যক্তিত্বের এক বিরাট পরিবর্তনসহ, জীবনে যা হতে চান- আপনি তাই হতে পারেন ।
আত্মবিশ্বাস অনেকভাবেই অর্জন করা যেতে পারে, শুরু হতে পারে আপনার বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে
যদি আপনি জীবন নিয়ে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে চান- আপনার ভেতরের সেই অসাধারণ মানুষটাকে ভেতর থেকে টেনে বাইরে নিয়ে আসেন ।
আপনার আত্মবিশ্বাসের ইতিবাচক শক্তি, আপনার নিজস্বতাকে খুঁজে পেতে- আজকেই খুলে ফেলুন সেই অপার সম্ভাবনার মানুষটিকে আঁটকে রাখা দরজাটি ।
আপনাকে অভিনন্দন, আপনি পারবেন এবং অবশ্যই পারবেন ।
Leave a Reply