প্রতিবছর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষের তালিকা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্বস সাময়িকী। সে তালিকায় গত ২২ বছরে মোট ১৭ বার যাঁর নাম শীর্ষে ছিল, তিনি বিল গেটস। মাইক্রোসফটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বিভিন্ন সাক্ষাৎকার, ভাষণে তরুণদের উদ্দেশে চমকপ্রদ সব পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
১. যত দ্রুত সম্ভব শুরু করে দিনঃ
কারণ, বুড়ো বয়সে যেন আপনাকে এই আপসোস না করতে হয় যে, ‘ইশ কত কি করতে পারতাম আমি! কতো কি করতে চেয়েছিলাম!’ বিল গেটস সবসময় একটি কথা বলেন, এখনই শুরু করে দাও । যে আইডিয়া মাথায় নিয়ে ঘুরছো তুমি, তা যদি সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারো, তাহলে কয়েক বছর পর দেখবে, ঠিক তোমার আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে অন্য কেউ না কেউ সফল হয়ে গেছে!’
২. প্রতিদিন নিজের সেরাটা দিতে হবে:
বিল গেটসের ভাষায়, ‘জীবনটা সেমিস্টার হিসেবে ভাগ করা নেই, যে দশ সপ্তাহ পর পর তুমি তোমার ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পাবে। এমনকি এখানে “ব্রেক” বলেও কিছু নেই।’
সুতরাং, প্রতিদিন আপনাকে আপনার সেরাটাই দিতে হবে।
৩. আপনি নিজেই নিজের বস:
যদি আপনি আপনার স্বপ্নপূরণের কাজে না নেমে পড়েন, তাহলে অন্য কেউ ঠিক তার স্বপ্ন পূরণে আপনাকে কাজে লাগাবে । তাই অন্যের স্বপ্ন-পূরণের পেছনে না ছুটে আপনি আপনার নিজের স্বপ্নের পেছনে ছোটেন ।
৪. ‘না’ বলতে শিখুন:
আপনি যত প্রতিভাবানই হয়ে থাকেন না কেন, প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার বেশি কিন্তু আপনার হাতে নেই । এই ২৪টি ঘণ্টাকে কে কীভাবে ব্যবহার করলো, সেটাই নির্ধারণ করে দেয়- একজন সফল ও ব্যর্থ মানুষের মধ্যে পার্থক্য ।
বিল গেটস একবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বক্তব্যে বলেছিলেন, জীবনের সেরা উপদেশটি আমি পেয়েছি বন্ধু ‘ওয়ারেন বাফেটের’ কাছে থেকে । সে বলেছিল, তোমাকে ‘না’ বলতে জানতে হবে । বিল গেটস মনে করেন, কখনো কখনো ‘না’ বলতে পারাটা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে অবিচল রাখতে সাহায্য করবে।
৫. দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হোনঃ
প্রত্যেক সফল উদ্যোক্তাই একটি ব্যাপারে খুব জোর দিতে বলেন- সেটি হচ্ছে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়া । প্রতিজ্ঞা আসে ভালোবাসা থেকে । কাজের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা তৈরি করুন । আপনি যে কাজটি করছেন, তার প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে আপনার । সফল মানুষেরা একমাত্র ভালোবাসা দিয়ে প্রতিটি কঠিন কাজকেই সহজ করে ফেলেন ।
৬. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং জীবনই আপনার সেরা স্কুল:
আপনি যত বইপুস্তক পড়ে থাকেন না কেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত পরীক্ষা দেন না কেন- এসবের কোনটাই আপনাকে পুরোপুরি শেখাতে পারবে না- কীভাবে জীবনের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় । আপনাকে নিজের জীবন থেকে শিখেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত হতে হবে ।
৭. আশা হারাবেন না:
লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে হতাশাবাদী হলে চলবে না। বরং সব সময় আশাবাদী হতে হবে। ২০১৩ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিল গেটস বলেছিলেন, ‘আশাবাদ অনেক সময় মিথ্যে আশায় পরিণত হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, “মিথ্যে হতাশা” বলেও কিছু আছে।’
৮. সমালোচনাকে স্বাগত জানান:
বিল গেটস তাঁর বিজনেস অ্যাট দ্য স্পিড অব থট বইয়ে সমালোচনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, অভিযোগ আর অসন্তুষ্টি আপনাকে আরও ভালো করার সুযোগ করে দেয়। তিনি লিখেছেন, ‘আপনার সবচেয়ে অসন্তুষ্ট কাস্টমাররাই আপনার শেখার সবচেয়ে বড় উৎস।’
৯. সাফল্যের হিসাব করুন:
২০০৩ সালে বিল গেটস দ্য মোস্ট পাওয়ারফুল আইডিয়া ইন দ্য ওয়ার্ল্ড নামে একটা বই থেকে তাঁর শিক্ষা কী, তা বলেছেন। ‘আপনি যদি একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে সব সময় হিসাব করেন, আপনি কতটুকু এগোলেন, তাহলেই লক্ষ্যে অবিচল থাকতে পারবেন।’ সঙ্গে তিনি এ-ও যোগ করেছেন, ‘এটা বলা যত সহজ, করা ততটাই কঠিন।’
১০. জীবনটা সহজ নয়, এটা মেনে নিন:
আপনার আশে পাশে যদি এমন কোন মানুষ থাকে যার এই লেখাটি পড়া উচিত বলে মনে করেন , তার সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন । অনুপ্রেরণামূলক গল্প, সফল ব্যক্তিদের জীবনী, সফলতার সূত্র এবং জীবনের নানান সমস্যা আপনাদের পাশে আছে পাই ফিঙ্গার্স মোটিভেশন । আর আগামী পর্বে আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান কমেন্ট করে জানান । ভাল থাকুন ।
সফলতা কেবল আপনার জন্যই ।
Leave a Reply