ভারত তথা পৃথিবীর সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি | শ্রীকান্ত জিচকার

Author:

Published:

Updated:

ভারতের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি

শ্রীকান্ত জিচকার একজন ভারতীয় নাগরিক । ৪২ টা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়েছেন ২০ টা ডিগ্রী । যেখানে একজন সাধারণ মানুষের সারা জীবন ৩ থেকে ৪ টা ডিগ্রী নিতেই হিমশিম খায় !!

পয়সার গরমতো জীবনে অনেক দেখলেন। কিন্ত বিদ্যার এমন গরম দেখেছেন না শুনেছেন কখনও ? সবটা শুনলে মাথা ঝিমঝিম করবে, হাত পা’ও অবশ হয়ে যেতে পারে বৈকি।এক জীবনে এত পড়াশোনা কোনও রক্ত মাংসের মানুষ করতে পারে, না পড়লে বিশ্বাস হবে না। তাও আবার সেই ভদ্রলোক যদি ভারতীয় হন !!

সবই হল যখন তখন মন্ত্রী হওয়াটাই বা আর বাকি থাকে কেন !

মারাঠি এই ভদ্রলোকের নাম ‘শ্রীকান্ত জিচকার’।

পড়াশোনার কেরিয়ারটা একবার চোখ বুলিয়ে নিন শুধু, তাহলেই মালুম পড়বে ভদ্রলোক কি কাণ্ডটাই না করেছেন।

১. জীবন শুরু MBBS, M.D দিয়ে।

২. এরপর L.L.B করলেন। সঙ্গে ইন্টারন্যাশানাল ল-এর ওপর স্নাতকোত্তর করলেন।

৩. এরপর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এর ওপর ডিপ্লোমা, সঙ্গে M.B.A

4. এরপর জার্নালিজম নিয়ে স্নাতক।

এতদূর পড়ার পর আপনার যখন মনে হচ্ছে লোকটা পাগল নাকি, তখন আপনাকে বলতেই হচ্ছে এ তো সবে কলির সন্ধ্যে। এখনও গোটা রাত বাকি।

এই ভদ্রলোকের শুধু স্নাতকোত্তর ডিগ্রীই আছে দশটা বিষয়ের ওপর ! স্নাতকোত্তরের বিষয়ের তালিকাটা একবার দেখে নেওয়া যাক-

১.পাবলিক আ্যডমিনিস্ট্রেশন

২. সোশিওলজি

৩. ইকোনমিক্স

৪. সংস্কৃত(ডি.লিট)

৫. হিস্ট্রী

৬. ইংরেজি

পড়ে আসুনঃ শৈশব থেকেই যিনি প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছেন

৭. ফিলোসফি

৮.পলিটিক্যাল সায়েন্স

৯. এনসিয়েন্ট ইন্ডিয়ান হিস্ট্রী, কালচার, এন্ড আর্কিওলজি

১০. সাইকোলজি

উপরের যতগুলো বিষয় দেখছেন সব ক’টিতেই প্রথম শ্রেণীর সঙ্গে স্নাতকোত্তর, এবং ২৮টি স্বর্ণপদক বিজয়ী।

 

সব মিলিয়ে ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রতি গ্রীষ্মে ও প্রতি শীতেই উনি কোনও না কোনও স্নাতকোত্তরের বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে গেছেন।

মাথা ঝিমঝিম করছে তো! তা মাথার আর দোষ কি বলুন! তবে মাথা ঘুরে পড়ে যাবার আগে একবারটি শুধু শুনে যান। এতসব পড়তে পড়তে ওনার যখন একঘেয়েমি লাগছিল, ঠিক করলেন এবার একটু স্বাদ বদলানো যাক!

ভারতের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি
শ্রীকান্ত জিচকার

তো স্বাদ বদলাতে আমি আপনি বেড়াতে যাই, আর উনি “আই.পি.এস(IPS)” পরীক্ষায় বসলেন আর পাশ করলেন। সেটা ১৯৭৮ সাল। কিন্তু পোষালো না চাকরিটা। চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে বসলেন “আই.এ.এস(IAS)” পরীক্ষায়। ১৯৮০-তে “আই.এ.এস(IAS)” হলেন।

নটে গাছটা তাহলে মুড়োলো শেষ অবধি। আজ্ঞে না মুড়োয়নি এখনও। চারমাসের মধ্যে “আই.এ.এস(IAS)” এর চাকরিটাও ছেড়ে দিলেন মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটে লড়বেন বলে। ১৯৮০-তে উনি যখন বিধায়ক নির্বাচিত হলেন তখন ওনার বয়স সবে ২৫।

‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডস’ ওনাকে “ভারতবর্ষের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি”র শিরোপা দিয়েছে।

ভারতের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি
শ্রীকান্ত জিচকার

উনি হলেন ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী বিধায়ক। সবই হল যখন তখন মন্ত্রী হওয়াটাই বা আর বাকি থাকে কেন! সেটাও হলেন এবং একটা দুটো দফতরের নয়, একেবারে ১৪টা দফতরের।১৯৯২ সাল নাগাদ রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হলেন।

ওনার এই ‘সামান্য’ কয়েকটি গুণ ছাড়াও উনি-

অসাধারণ চিত্রশিল্পী,

পেশাদার ফটোগ্রাফার,

মঞ্চাভিনেতা,

সখের বেতার চালক ও জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ ও ইউনেস্কোতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৮৩-তে উনি ‘বিশ্বের অসামান্য দশজন তরুণ’ হিসেবে নির্বাচিত হন।

ভারতের অন্যতম বিখ্যাত পুরোহিত ছিলেন।অগ্নিহোত্রী গোত্রের ব্রাহ্মণ হিসেবে তিনি তিন ধরণের পবিত্র বৈদিক যজ্ঞ পালন করতেন এবং নিজে হাতে অত্যন্ত কঠিন ‘অগ্নিষ্টোম’ ও ‘বাজপেয় সোমযজ্ঞ’ এর আয়োজন করেন ও ‘দীক্ষিত’ উপাধিতে ভূষিত হন।

ভারতের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি
শ্রীকান্ত জিচকার

ব্যক্তিগত সংগ্রহে ৫২০০০০ বই রয়েছে ওনার। ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডস’ ওনাকে “ভারতবর্ষের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি”র শিরোপা দিয়েছে। ১৯৮৩-তে উনি ‘বিশ্বের অসামান্য দশজন তরুণ’ হিসেবে নির্বাচিত হন।

২০০৪ সালে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটানায় এই মেধাবী মানুষটি মারা যান । 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Latest Posts

  • ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?

    ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?

    ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কোন পণ্য বা সেবার মার্কেটিং করাকে এককথায় ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং কি এর সংজ্ঞাটা দেওয়া হলেও ডিজিটাল মার্কেটিং এতোটাও সহজ কিছু না। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কীভাবে করে? ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা কি, অসুবিধা কি, ডিজিটাল মার্কেটিং পেশা হিসেবে কেমন- এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে…

    Read more

  • জাকারবার্গ এবং ফেসবুকের গল্প | কীভাবে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন

    জাকারবার্গ এবং ফেসবুকের গল্প | কীভাবে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন

    বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। আমরা অনেকেই মার্ক জাকারবার্গ এর ফেসবুকের গল্প জানি । একটি ছোট্ট রুম থেকে সারা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পরে সকল ভাষাভাষী মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাসকে বদলে দিয়েছে ফেসবুক । কি ভাবে মার্ক জাকারবার্গ করলেন এটা ? আপনি কি জানেন জাকারবার্গকে তার স্বপ্নের জন্য কি কি ত্যাগ করতে…

    Read more

  • বিয়ার গ্রিলসের হার না মানা গল্প

    বিয়ার গ্রিলসের হার না মানা গল্প

    ডিসকভারি চ্যানেলে ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠানটি দেখেননি এমন লোক কমই পাওয়া যাবে । অনুষ্ঠানটি যার কারণে সারা বিশ্বে এতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে তিনি হচ্ছেন এডওয়ার্ড মাইকেল বিয়ার গ্রিলস (Bear Grylls) । সবার কাছে বিয়ার গ্রিলস নামেই পরিচিত। তিনি একাধারে একজন লেখক, টেলিভিশন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, সাবেক সেনা কমান্ডো ও বর্তমানে বিশ্ব স্কাউট সংস্থার চীফ অব স্কাউট ।…

    Read more