ফেসবুক (Facebook) একটি সাইলেন্ট কিলারের নাম । এটি আপনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে ধীরে ধীরে ।
কি অবাক হচ্ছেন ?
আপনি হতাশ !
আপনি জানেন কি আপনার বেশিরভাগ হতাশা কোথা থেকে আসে?
শুনে অবাক হবেন…
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম আপনার হতাশার অন্যতম কারণ ।
প্রশ্ন হল, কীভাবে?
ধরুন আপনি, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট অথবা অন্য কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একজন নিয়মিত ব্যবহারকারী । এবার আসি ব্যক্তিজীবনে এর কিছু ভয়াবহ প্রভাব নিয়ে ।
আমাদের প্রত্যেকেরই ব্যক্তিজীবনে অনেক বড় বড় অর্জনের মাঝেও হাজারটা অপূর্ণতা থাকে ।
আপনি একটু ভেবে দেখুন তো, আপনি ফেসবুকে যখন একটি ছবি পোস্ট করেন, সবার আগে কোন ছবিটা নির্বাচন করেন?
নিশ্চয় সব থেকে সুন্দর ছবিটা?
আপনি কোন মুহূর্তগুলোকে ফেসবুকে শেয়ার করেন, আপনার সবচেয়ে ভাল সময়গুলো!
অনেকদিন পর আপনি কোথাও ঘুরতে গেলেন, আপনি চাইবেন আপনার সুন্দর ও মজার অভিজ্ঞতাগুলো ফেসবুকের অন্য বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ।
আপনি চাকরি জীবনে প্রোমোশন পেয়েছেন, আপনার ইচ্ছা হবে- এই আনন্দের সংবাদটা আপনার বন্ধুরা জানুক । অথবা আপনি আপনার কোন একটা স্বপ্ন পূরণ করেছেন, আপনি খুব স্বাভাবিকভাবেই এটা আপনার কমিউনিটির অন্য সবাইকে জানাতে চাইবেন ।
জীবনের লক্ষ্য কিভাবে স্থির করবেন ? জানতে ক্লিক করুন …
এবার একটু অন্য এঙ্গেল থেকে ভাবুন…
আপনি যে ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন সেটি আপনার অসংখ্য ছবির মধ্যে সবচেয়ে ভাল ছবিটি । বাস্তবে আপনি হয়ত এই ছবিটির মতো অতো স্মার্ট বা গুড লুকিং না ।
আজ যেটা দেখছেন, কাল তার উল্টো কিছু দেখবেন ।
আপনি দিনের পর দিন ক্রাইসিসের মধ্যে থেকে, অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে কোথাও থেকে ঘুরে এসে, নিজেকে ফিরে পেতে চেয়েছিলেন, যা আপনি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন । কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার বন্ধুরা আপনার ভাল এবং সুন্দর সময়টাকেই জানলো, আপনার যে ভেতরে ভেতরে সঙ্কট চলছে- সেটা কি কেউ জানতে পেরেছে, না আপনি তাদের বলেছেন?
আপনার কোন একটি স্বপ্নপূরণের সাক্ষী হল ফেসবুক বন্ধুরা, কিন্তু তারা কি জানে এই স্বপ্নের জন্য কতটা ত্যাগ আপনি করেছিলেন?
আপনি হয়ত কাঙ্ক্ষিত প্রমোশনটি পেয়েছেন বছরের পর বছর সাধনা করে, অমানবিক পরিশ্রম করে, আপনার এই উন্নতির পেছনে আছে হয়ত হাজারটা কষ্টের অভিজ্ঞতা!
এমন অনেক কাপল আছেন, যাদের যৌথ ছবি দেখে মনে মনে ভাবছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ তারা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে হয়ত ভিন্ন ।
অথচ এর কিছুই জানলো না আপনার ফেসবুক বন্ধুরা, জেনেছে আপনি খুব ভাল একটি পদোন্নতি পেয়েছেন!
আপনার কোন একটি স্বপ্নপূরণের সাক্ষী হল ফেসবুক বন্ধুরা, কিন্তু তারা কি জানে এই স্বপ্নের জন্য কতটা ত্যাগ আপনি করেছিলেন ?
মার্ক জাকারবার্গের জীবনী জানতে …
আসল সত্যটা হচ্ছে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা আমাদের সবচেয়ে ভাল, সুন্দর, বড়, মজার, আনন্দের ব্যাপারগুলোই নিয়ে কথা বলি । এগুল আমাদের জীবনের দৈনন্দিন ব্যাপার না । এর বাইরে অনেক বড় একটা অংশ জুড়ে থাকে জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টির জায়গা ।
কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ফেসবুক বন্ধুদের ফোকাস করা বিষয়গুলোকে তুলনা করতে থাকি । আপনার যে বন্ধুটির নতুন গাড়ী কেনার সংবাদে আপনি ভাবছেন, জীবনে কিছুই করতে পারলাম না, খোঁজ নিয়ে দেখুন, হয়তবা ব্যাংকে বড় একটি ঋণের বোঝা বহন করে চলছে সে । আপনার যে বন্ধুকে দেখে ভাবছেন, আমি কেন ওর মতো সুখী নই, আমার জীবনে সুখ কোথায়? আপনার সেই বন্ধুটি হয়ত পারিবারিক জীবনে সবচেয়ে অসহায় পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে ।
তাই বলছি, দয়াকরে আজ থেকে আপনার ব্যক্তিগত জীবনেকে অন্য কারো প্রকাশিত ও প্রচারিত জীবনের সাথে তুলনায় যাবেন না ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টির জায়গা । তাই ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট অথবা অন্য কোন সামাজিক মাধ্যম দিয়ে কারো বাস্তবতার বিচার করতে যাবেন না ।
যার ফেসবুক পোস্টে মাত্র ৫-৭ টি লাইক পড়ে, বাস্তবে হয়ত সেই মানুষটির প্রচুর শুভাকাঙ্ক্ষী বা বন্ধুবান্ধব আছে । আর যার লেখায় হাজার হাজার লাইক পড়ে, এমনও হতে পারে বাস্তিব জীবনে তার মতো নিঃসঙ্গ মানুষ নেই ।
এমন অনেক কাপল আছেন, যাদের যৌথ ছবি দেখে মনে মনে ভাবছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ তারা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে হয়ত ভিন্ন ।
যার ফেসবুক পোস্টে মাত্র ৫-৭ টি লাইক পড়ে, বাস্তবে হয়ত সেই মানুষটির প্রচুর শুভাকাঙ্ক্ষী বা বন্ধুবান্ধব আছে । আর যার লেখায় হাজার হাজার লাইক পড়ে, এমনও হতে পারে বাস্তিব জীবনে তার মতো নিঃসঙ্গ মানুষ নেই ।
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তারা দুজনই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন । তারা নিজেরাও জানেন না একটু পরই হয়ত তাদের বিচ্ছেদ হতে যাচ্ছে ।
আমরা যা দেখি, তার সবকুছুই সত্যি নয় । আমাদের দেখার মধ্যে কিছু ফাঁকফোকর সবসময়ই থেকে যায় । আজ যেটা দেখছেন, কাল তার উল্টো কিছু দেখবেন । এটাই স্বাভাবিক । এটাই নিয়ম ।
তাই চোখের ধাঁধা থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন । সুন্দর করে বাঁচুন । আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জনগুলোকে নিয়ে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করুন । সফল হোন ।