ঢাকার একটি পার্ক। ধরা যাক চদ্রিমা উদ্যান। কি সুন্দর নাম। এখানেই পরী নামের মেয়েটার সাথে পরিচয় হয় মোমিনের। মোমিন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। এখন বয়স হয়েছে। ডিপার্টমেন্টে সৎ মানুষ হিশেবে খুব সুনাম ছিল। ঘুষ খেতেন না বলে খুব একটা কিছু করতে পারেননি। মোমিনও আজ বছর তিনেক হলো এমএ পাস করে বসে আছে। ভালো কোনো চাকরি পাচ্ছে না। একটা চাকরি অবশ্য সে করতো তবে ছেড়ে দিয়েছে । তার চাকরি করার কোনো ইচ্ছে নেই! চাকরির ধরাবাঁধা নিয়ম তাঁর পছন্দ নয় । ছয়-সাত ঘন্টার অফিস করা তাঁর কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিরক্তকর কাজ বলে মনে হয় । এখন তার কাজ হচ্ছে সারাদিন ঘুরে বেড়ানো আর ক্লান্ত হলে পার্কের বেঞ্চিতে খানিকটা গড়িয়ে নেওয়া।
এরকমই এক দুপুরে পার্কের বেঞ্চিতে নিজের চটি জুতো জোড়া পেপারে মুড়িয়ে বালিশ বানিয়ে খানিকটা ঘুমিয়ে নেওয়ার আয়োজন করছিলো মোমিন। ঠিক এমন সময় তার সাথে খান সাহেবের পরিচয় হয়। খান সাহেব মানুষটি বিচিত্র স্বভাবের। কথায় কথায় ইংরেজী বলেন। এসেই মোমিন কে সালাম দিয়ে শুদ্ধভাবে বললো- “স্যার, সময় কাটানোর জন্য আপনার কী বান্ধবী লাগবে ? বয়স কম স্যার, কলেজ গার্ল। ভেরি হট!”
“স্যার, সময় কাটানোর জন্য আপনার কী বান্ধবী লাগবে ? বয়স কম স্যার, কলেজ গার্ল। ভেরি হট!”
মোমিনের এসব অপরিচিত না। তবে তাকে যেটা অবাক করলো তা হলো খান সাহেবের শুদ্ধভাবে কথা বলার ভঙ্গিমা এবং ভরাট কণ্ঠস্বর। খান সাহেব বিচিত্র এক শব্দ করাতে গাছের আড়াল থেকে বেড়িয়ে এলো একটা মেয়ে । মেয়েটার নাম পরী। পরী মেয়েটার আসল নাম না। নকল নাম। এসব মেয়েদের দুইটা নাম থাকে একটা আসল একটা নকল। পরীকে দেখে মোমিন কিছুটা অবাক হলো। এরকম তো কখনো সে দেখেনি। পরীর চুলগুলো পরিপাটি করে লেসের ফিতা দিয়ে বাঁধা। খোঁপায় দুটো কদম ফুল গুঁজে দেওয়া ।
এখন বর্ষাকাল। আচ্ছা বর্ষাকাল না হলে মেয়েটা খোঁপায় কি ফুল গুঁজতো ? পরনে হাল্কা লাল রঙের শাড়ি সাথে কালো ব্লাউজ। গায়ের রঙটা কিছুটা কালোর দিকে। তবে মুখের অবয়বে কিছু একটা আছে, মায়া হবে হয়তো! ঠোঁটে লাল লিপিস্টিক দেওয়া তবে একেবারে গাঢ় করে নয়। কিন্তু মেয়েটার শরীরটা বেজায় রোগাটে। গলার কাছের হাড় বেঁড়িয়ে গেছে। এই হলো পরী। এখানেই পরীর সাথে মোমিনের পরিচয় হয়।
আগের সেই মায়া আর খুঁজে পায়নি, দেখতে পেয়েছিল ক্ষুধার্ত দুটো চোখ।
পরিচয় মানে খান সাহেবের কথাতে রাজি না হয়ে মোমিন সেদিন ঠিকই পার্কের বেঞ্চিতে ঘুমিয়ে পড়ে । কিন্তু এর ঠিক বিশ ত্রিশ মিনিট পরেই বৃষ্টি শুরু হলে মোমিনকে বাধ্য হয়ে উঠতেই হয়। উঠেই সে দেখে তার কিছু দূরে একটা গাছের গোড়ায় পরী আর সেই খান সাহেব। খান সাহেব কালো মতন একটা ফাইল পরীর মাথার উপরে ধরে বৃষ্টি আটকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছেন। মোমিন আশ্চর্য হয়ে যায় । তারা কি এখনো তাঁর আশায় বসে আছে ? নাকি আজ কোনো খদ্দরই জুটেনি তাদের ভাগ্যে !
মোমিন পরীর চোখের দিকে তাকিয়ে একটু আগের সেই মায়া আর খুঁজে পায়নি, দেখতে পেয়েছিল ক্ষুধার্ত দুটো চোখ। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এখন এদের খদ্দের পাওয়া প্রায় অসম্ভব। সেদিন মোমিনের পকেটে ১০০ টা টাকাই ছিলো। পরীর হাতে জোর করে গুঁজে দিয়ে এসেছিলো।
এর ঠিক কিছুদিন পরেই মোমিন আবার সেই পার্কে গেলো পরীকে খুঁজতে। আজ সে পরীর জন্য একটা চাকরির সংবাদ নিয়ে এসেছে। চাকরি এখনো ঠিক হয়নি তবে হয়ে যাবে। তার আগে পরী চাকরি করবে কিনা তার মতামত নেওয়ার দরকার।
প্রত্যেকটা মানুষের নিজস্ব একটা মতামত আছে। যেটা আমরা অধিকাংশ সময়ই ভুলে যাই। খুব আহামরি কিছু না এই গার্মেন্টসের চাকরি। অবশ্য এভাবে পার্কে পার্কে এসব করার থেকে গার্মেন্টসের চাকরিটা পরীর জন্য আসমানের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। আজও পরী ঠিক আগের দিনের মতোই সেজেছে। খোঁপায় ঠিক দুটো কদম ফুল। সেই লাল শাড়ি, কালো ব্লাউজ, আর রোগাটে শরীরটা ।
মোমিন পরীকে কাছে এনে বসিয়ে বললো- “খান সাহেব চা আনতে গেছেন। পরী শোনো, আজকে আমার পার্কে আসার উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে তোমাকে খুঁজে বের করা। আগে বলো কেমন আছো ?”
পরী কিছুটা অবাক হলো। এই মানুষটা কেমন যেন। পাগল পাগল। পরী তার অবাক হওয়ার ভাব লুকিয়ে কিছুটা চনমনে গলায় উত্তর দিলো – “ভালো আছি।”
মোমিন এবার আসল কথা বলতে শুরু করলো- “পরী শোনো, খুব মন দিয়ে শোনো । ওইদিন তোমাকে পার্কে দেখে আমার খুব মন খারাপ হয়ে গেছে। আমি তোমার জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি। খুব সাধরণ চাকরি। এই যেমন ধরো গার্মেন্টসে। আমি যদি চাকরিটা যোগাড় করতে পারি করবে?”
এরপর কি হয় ? পরীই বা কি উত্তর দিয়েছিলো ? সেটা না হয় পরে জানবো আমরা । তবে সেদিন কথার শেষে মোমিন পরীকে একটা চকলেট দেয়। একটা গোলমত ছোট চকলেট । দামী চকলেট। মোমিন তাকে বলে খাও। কিন্তু পরী সেটা না খেয়ে হাতের তালুতে লুকিয়ে রাখে।
এরপর পরী তার বস্তিতে ফিরে যায়। বস্তিতে যেখানটায় পরীদের ঘর। একটা মাত্র ঘর। আসলে ঘর বললে ভুল হবে। গোলাকার ঘর বলা যেতে পারে। পরীদের মুখ চারটা। পরীর মা নেই। পরীরা তিন বোন। একদম ছোটটার বয়স পাঁচ কি ছয় হবে। বাবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। এখন পুরোপুরি শয্যাশায়ী। কোনো রকমে বিছানায় উঠে বসতে পারে এই পর্যন্তই। পুরো পরিবারটির তিনবেলা আহারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব এখন ১৮-১৯ বছরের পরীর ঘাড়ে !
সেখানেও হাসি আছে, কান্না আছে, জন্ম আছে, মৃত্যু আছে এমনকি প্রেম ভালোবাসাও আছে !
বস্তির পাশেই কতগুলো সিমেন্টের রিং রাখা আছে। সিটি কর্পোরেশন রেখেছে। এখন বর্ষাকাল তবে ঘোর বর্ষা এখনো নামেনি। এগুলো বিভিন্ন খানাখন্দে বসানো হয়। কিন্ত সেই দুমুখো গোল রিং গুলোতেও কিছু পরিবার বাস করে। দুপাশের খোলা মুখে চট দিয়ে তার ভিতরেই তাদের সংসার। এরকমই একটা বড় রিং পরীদের চার সদস্যের পরিবারটা দখল করে সংসার পেতেছে। এ যেন এত বড় ঢাকা শহরের বড় বড় ইট সিমেন্টের ইমারতের পাশে আরেকটা দুনিয়া, নতুন দুনিয়া। সেখানেও হাসি আছে, কান্না আছে, জন্ম আছে, মৃত্যু আছে এমনকি প্রেম ভালোবাসাও আছে !

সে যাই হোক। পরীদের গোল রিং রিং সংসারের পাশেই আরেকটা রিং এ মনু নামের ছোট্ট একটা মেয়েকে নিয়ে থাকে তার মা। পরী বস্তিতে এসেই মনুকে ডেকে নিয়ে তার গোল সংসারে গিয়ে বসে পড়ে। বিকেল গড়িয়ে গেছে এখন। আকাশ খানিকটা মেঘলা। বৃষ্টি হতে পারে।
আচ্ছা বৃষ্টি হলে এদের এই গোল গোল রিং এর সংসার গুলো কিভাবে চলে ? বৃষ্টির পানিকে কি দুপাশের চটের বস্তাগুলো আটকাতে পারে ? আচ্ছা পরী তখন তার দুটো ছোট বোন আর পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবাকে নিয়ে কি করে ? তার বাবা কি রেগে উঠেন ? চিৎকার করেন ? আচ্ছা তারা রান্না করে কোথায় ? আর একটা রিংয়ের ভিতরে চারটা প্রাণী কিভাবে থাকে ? তারা কি মানুষ ? আসলেই কি তারা এই শহরেরই মানুষ ?
পরী তাদের রিংয়ের মুখে বসে আছে । তার চারপাশ ঘিরে বসে আছে পরীর দু বোন আর মনু নামের ছোট্ট মেয়েটা। সবার চোখ পরীর হাতের দিকে। পরীর হাতে মোমিনের দেওয়া সেই ছোট গোল চকলেটটা। পরী খুব সাবধানে চকলেটের মোড়কটা খুলে। তিনটা ভাগ করে তিনজনকে দিয়ে মোড়কটা সেখানে ফেলে উঠে পড়ে। তার রান্না বান্নার কাজ আছে।
এরপর মোমিন কি পেরেছিলো পরীর একটি চাকরি জোগাড় করে দিতে। কিংবা মোমিন নিজেই কি চাকরি পেয়েছিলো?
এতক্ষণ এই পুরো ব্যাপারটা পরীর বাবা শুয়ে শুয়ে পর্যবেক্ষণ করছিলো। পরী উঠে যেতেই তিনি বিছানা থেকে কোন রকমে উঠে সেই মোড়কটা হাতে নিলেন । সেখানে এখনো কিছুটা চকলেট লেগে আছে । তিনিও ছোট বাচ্চার মতো মোড়কটাসহ সেটি মুখে নিয়ে চুষতে থাকেন। তার ছোট মেয়েটা বাবার এমন কান্ডে হা করে বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো । বাবা অপ্রস্তুত হয়ে বলে উঠেন – “জিনিসটা ভালো।” তবে তা ফেলে দেন না। চারজন মিলেই বারবার আঙুল চাটতে থাকেন। দেখে মনে হবে এখনো হয়তো আঙুলে চকলেট লেগে আছে! একটা মাত্র ছোট্ট চকলেট। চারটা হাস্যজ্বল চোখ, মুখ। এরা যে এত অল্পতেই খুশি হয় এরা কি নিজেরা তা জানে?
এরপর মোমিন কি পেরেছিলো পরীর একটি চাকরি জোগাড় করে দিতে। কিংবা মোমিন নিজেই কি চাকরি পেয়েছিলো? সিটি কর্পোরেশন কি ঘোর বর্ষা শুরু হওয়াতে সেই রিং গুলো নিয়ে গিয়েছিলো? নিয়ে গেলে পরীরা এখন কোথায় থাকে?
এরকম অসংখ্য গল্প আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের অতি পরিচিত গল্প। আমি উপরে যে গল্পটি বলার চেষ্টা করলাম সেটি আসলে আমার লেখা নয়। একটি নাটকের ক্ষুদ্র একটি অংশ দেখে লেখা। আমার মনে হয় এই ক্ষুদ্র অংশটি থেকে এরকম আরো দশটি গল্প লিখা সম্ভব। ক্ষুদ্র অংশ কিন্তু এত না বলা কথা সেই ক্ষুদ্র অংশের মধ্যে । অবাক হতে হয় নাট্যকারের ক্যারিশমা দেখে !
এটি হুমায়ূন আহমদের একটি নাটকের অংশ বিশেষ। নাটকটির নাম “নক্ষত্রের রাত“। নাটকটি আমাকে চোখের কান্না কাঁদায়নি! তবে আমি কেঁদেছি । ভাবছেন এ কিরকম সাংঘর্ষিক কথা। উপরের সমগ্র ব্যপারটা নাটকটির মাত্র তিন থেকে চার মিনিটের অংশ বিশেষ। কিন্তু এই তিন চার মিনিটেই যেন বহু মিনিটের, বহু ঘন্টার, বহু দিনের, বহু বছরের কথা আছে। হ্যা, আমি কেঁদেছি, নিশ্চুপ কান্না যাকে বলে। কেমন যেন মোচড় দিয়ে, বুকের ভিতরে দম আটকানো একটা কান্না। পরীর বাবা যখন সেই খালি চকলেটের মোড়কটা হাতে নিয়ে অভুক্ত কুকুরের মতো খেতে থাকে তখন আপনাকে সেই দৃশ্য কাঁদাবেই ! অথচ মাত্র কয়েক সেকেন্ডেরই তো সেই দৃশ্য।
হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া শুরু করি প্রথম সেই ক্লাশ নাইনে থাকতে। “মেঘ বলছে যাব যাব” আর “অপেক্ষা” এই দুটো বই দিয়ে । মুহুর্তেই তার লেখার যাদুতে আটকে পড়ি। তারপর পরিচয় হয় হিমুর সাথে তারপর মিসির আলী। এ এক অন্যরকম জগত। আমি প্রায় পুরো দুটো বছর হুমায়ুনেই আটকে ছিলাম। আচ্ছা এখন যারা ক্লাশ নাইনে বা কলেজে পড়ছে তারা কি হুমায়ুনের বই পড়ে? কিংবা অন্য কোনো লেখকের?
হুমায়ূন আহমেদের গল্প, উপন্যাস, কিংবা নাটকে ছোট ছোট সহজ কথা, কিছুটা হাস্যরস, কিছুটা পাগলাটে, সবকিছু মিলিয়ে যে অনুভূতিটা হয় সেটা হলো, এ তো আমাদের কথাই বলছে কিংবা আমাদের মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা অব্যক্ত কথাগুলোই বলছে, চাপা দিয়ে রাখা আমাদের পাগলাটে স্বভাবটার কথাই তো বলছে বা দেখাচ্ছে।
হুমায়ুন আহমদের নাটকের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। উপরের “নক্ষত্রের রাত” নাটকটি একটি ধারাবাহিক নাটক। নাটক দেখে প্রথমেই আমার যেটা মনে হয়েছে সেটা হলো আজকের এখনকার দিনের নাটকগুলোর কথা। ভাড়ামি আর অসংলগ্নতায় ভরপুর। কোন রকম দায়বদ্ধতা আমি দেখি না এখনকার নাটক কিংবা সিনেমাগুলোতে। দু একটা ভালো যে হচ্ছে না তা না । অথচ নাটক কিংবা চলচিত্রের মতো শক্তিশালী হাতিয়ার খুব কমই আছে পৃথিবীতে। একটি ভালো মানের চলচিত্র একটি এটম বোমার থেকেও শক্তিশালী, একটি রাষ্ট্র্যের থেকেও ক্কমতাশালী হয়ে উঠতে পারে ।
একটি ভালো মানের চলচিত্র একটি এটম বোমার থেকেও শক্তিশালী, একটি রাষ্ট্র্যের থেকেও ক্কমতাশালী হয়ে উঠতে পারে ।
হুমায়ূন আহমেদের প্রতিটি নাটকের প্রতিটি পর্বে, প্রতিটি সংলাপে একটা মেসেজ আছে বা মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আশ্চর্যের ব্যপার হলো, শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাই সেই মেসেজটা ধরতে পারে বা পারবে । এখানেই আরেকবার আমি হুমায়ূন আহমেদের যাদুতে আটকে যাই।
শিল্প-সাহিত্য জগতের তিনটি মানুষের মৃত্যুতে আমি গভীর বেদনায় সিক্ত হয়ে পড়ি । আমার মর্মমূলে আমি এক ধরনের চাপা কান্না অনুভব করি। মান্না দে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুমায়ূন আহমেদ।
হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর খবরটা পাওয়ার পর আমি অনেকক্ষণ একটা ঘোরের মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে ছিলাম। এটা ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদের জন্য সমবেদনা নয়, বা ব্যক্তি হুমায়ূনের জন্য কান্না নয়, এ হলো আর তাঁর নতুন কোনো লেখা পড়তে পারবো না, এই সত্য ভাবনাটাই আমাকে একটা ঘোরে নিয়ে গিয়েছিলো। একটা কান্নার ঘোরে, একটা অব্যক্ত ব্যথার ঘোরে !
কয়েকদিন আগেই হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু দিবস গেলো । ছয় বছর হয়ে গেলো। কিন্তু তিনি আজও এতটা জীবন্ত, এতটা প্রাণবন্ত, এতটা সতেজ যে তিনি নেই এটা কখনো খুব একটা মনেই হয়নি। মনের এত গভীরে তার লেখাগুলো প্রথিত হয়ে আছে যে, তিনি আজীবন আমার মাঝে, আমার মতো এরকম হাজারো পাঠকের মাঝে জীবন্ত হয়েই রইবেন। আপনাকে স্যালুট স্যার, যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।
লেখকঃ
অনিমেষ মিত্র, বনানী, ঢাকা ।