Pi Fingers Motivation

পড়া মনে রাখার ১০ টি বৈজ্ঞানিক কৌশল

Author:

Published:

Updated:

পড়া মনে রাখার টিপস, পড়া সহজে মনে রাখার টিপস

Affiliate Disclaimer

As an affiliate, we may earn a commission from qualifying purchases. We get commissions for purchases made through links on this website from Amazon and other third parties.

অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা খুব প্রচলিত কথা হচ্ছে, পড়া মনে থাকে না আমার, যা পড়ি সবই ভুলে যাই । কিচ্ছু মনে রাখতে পারি না ।

frustration

নিজেদের প্রতি তাদের এই বিশ্বাসের ফলে একসময় পড়াশোনার প্রতি খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি ভীতি তৈরি হয়ে যায় । যার পরিণাম পড়াশোনায় অমনোযোগিতা, ভাল ফলাফলে ব্যর্থ হওয়া, আত্মবিশ্বাস না থাকা, হতাশা এবং আরও অনেক কিছু ।

তাদের কাছে পড়াশোনাটা এতোটায় অপছন্দের হয়ে দাঁড়ায় যে, যদি বলা হয়, তোমাকে পড়াশোনা করতে হবে না, তুমি বরং কাজকর্ম করো । সে এমন কি পড়াশোনা থেকে পালানোর জন্য যেকোন কঠিন কাজ করতেও রাজি ।

৪৬৭৮৯০-কে মনে রাখা যতটা সহজ তার চাইতে ৪৬৭ ও ৮৯০ এই দুই ভাগে ভাগ করে সংখ্যাটা মনে রাখা বেশি সহজ।

তারা ভাবে, ঈশ ! কি দরকার ছিল জীবনে পড়াশুনা নামের এই জিনিসটা থাকার?? কিন্তু তা তো আর সম্ভব নয়। তাই পড়ে মনে রাখার জন্য একেকজন একেক কৌশল অনুসরণ করেন।

কিন্তু এ বিষয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান কি বলে ? চলুন চিকিৎসাবিজ্ঞান বা ডাক্তারি মতে পড়ে মনে রাখার ১০ টি কৌশল সম্পর্কে জেনে নেই-

১) যা শিখতে হবে সে ব্যাপারে আকর্ষণ অনুভব করা: মানুষ যখন কোন বিষয়ের উপর আকর্ষণ অনুভব করে তখন সে তা সহজেই মুখস্ত করে ফেলতে পারে। আমাদের স্মৃতি গঠন বা মেমরি ফর্মেশনের জন্য সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করে মস্তিষ্কের লিম্বিক সিস্টেম (Limbic system)।

আরো সুস্পষ্ট করে বললে এই সিস্টেমের হিপ্পোক্যাম্পাস (hippocampus)। হিপ্পোক্যাম্পাস আনন্দ ও কষ্টের অনুভূতির সাথে সম্পর্কিত। আনন্দ ও কষ্টের বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের এক ধরনের আকর্ষণ কাজ করে।

তাই এটা সব সময় আনন্দের বা কষ্টের বিষয়গুলোকে দ্রুত স্মৃতি বা মেমরীতে রূপান্তর করে ফেলে। ফলে মানুষ কষ্টের স্মৃতি কখনো ভুলেনা। সাথে সাথে আনন্দের ঘটনাগুলোও স্থায়ী স্মৃতি বা পার্মানেন্ট মেমরি হয়ে যায়। তো, কোন কিছু শিখতে চাইলে আগে বিষয়টির ব্যাপারে আকর্ষণ জাগাতে হবে।

মানুষ দেখার মাধ্যমে বা ভিজ্যুয়াল ওয়েতে বেশি শিখে।

২) খেয়াল করে চোখ দিয়ে দেখে পড়তে হবে: মানুষ যা কিছু মনে রাখার চেষ্টা করে তার মধ্যে সব থেকে সহজে মনে থাকে ভিজ্যুয়াল মেমরি। অর্থাৎ যা মানুষ চোখে দেখে মনে রাখে। খেয়াল করে দেখবেন, কাউকে কিছু মনে করতে বলা হলে সে ঐ সময়ের ঘটনাটাকে মনে করার চেষ্টা করে।

সবচেয়ে দ্রুত পড়ার কৌশল জানতে ক্লিক করুন

এমনকি পড়া ধরলে অধিকাংশ সময়ই আমাদের চোখের সামনে বইয়ের পৃষ্ঠা ভেসে উঠে। এতে বুঝা যায় মানুষ দেখার মাধ্যমে বা ভিজ্যুয়াল ওয়েতে বেশি শিখে। ফলে মনে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে বেশি বেশি ছবি, ছক, বইয়ের পৃষ্ঠা ও আনুষাঙ্গিক চিত্র দেখতে হবে।

৩) অল্প অল্প করে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে: কোন কিছু মনে রাখতে হলে তা বিভিন্ন অংশ বা সেগমেন্টে ভাগ করে পড়া বেশ উপকারী। যেমন ৪৬৭৮৯০-কে মনে রাখা যতটা সহজ তার চাইতে ৪৬৭ ও ৮৯০ এই দুই ভাগে ভাগ করে সংখ্যাটা মনে রাখা বেশি সহজ।

মি. বিনের জীবনী ও সংগ্রামের গল্প

আমরা পাঠ্যবইয়ের অনেক অনেক বড় বড় সংজ্ঞা পড়তে ভয় পাই। কিন্তু বড় সংজ্ঞাকে কয়েকভাগে ভাগ করে পড়লে দেখবেন তা সহজেই মনে থাকছে। এর কারণ আমদের ব্রেইন অনেক বড় একটা জিনিসের চাইতে ছোট জিনিসে বেশি মনোযোগ (কনসেনট্রেশন) দিতে পারে। আর তাই বড় পড়াকে ছোট ছোট ভাগ করে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

মানুষ কোন কিছু লিখতে চাইলে সেই লেখার প্রতি তার মনোযোগ বেড়ে যায়। এটা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি বা পার্মানেন্ট মেমরি তৈরীতে সাহায্য করে।এতে সহজেই পড়া মনে থাকবে।

৪) নতুন শিখতে যাওয়া বিষয়ের সাথে পূর্বে শেখা বিষয়ের সাদৃশ্য খুঁজতে হবে: আমাদের ব্রেইন কোন একটা বিষয়কে নতুন পেলে সে তার পুরোনো স্মৃতি বা মেমরির সাথে তুলনা করা শুরু করে। পুরোনো মেমরির সাথে মিলে গেলে তা খুব দ্রুত পূর্বের মেমোরির সাথে যোগ করে নেয়।

কিন্তু যদি সম্পূর্ন নতুন কিছু শিখতে হয় তবে ব্রেইনকে নতুন করে মেমোরি ট্রি তৈরী করতে হয় যা একটু সময় সাপেক্ষ। এ কারনে পুরনো কোন বিষয়ের সাথে মিলিয়ে পড়লে পড়া খুব সহজে মনে থাকে।

৫) লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস করতে হবে: লিখে লিখে পড়লে আমাদের ব্রেইনের অনেক বেশি এলাকা উদ্দীপ্ত (স্টিমুলেটেড) হয়। আবার লেখার সাথে ব্রেইনের যে অংশগুলো জড়িত তা তথ্য (ইনফর্মেশন)-কে স্থায়ী স্মৃতি (পার্মানেন্ট মেমরি)-তে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে।

এছাড়া মানুষ কোন কিছু লিখতে চাইলে সেই লেখার প্রতি তার মনোযোগ বেড়ে যায়। এটা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি বা পার্মানেন্ট মেমরি তৈরীতে সাহায্য করে।

বিশেষ করে বিকালের পরে ব্রেইনের ক্রিয়াশীলতা বেশি বাড়ে। তাই সকালে পড়ার থেকে বিকালে বা সন্ধ্যার পরে পড়া বেশি কার্যকর।

৬) মার্কার ব্যবহার বা কালারিং করে পড়াও কার্যকর: অনেকে পড়ার সময় মার্কার ব্যবহার করে। এটা বেশ কার্যকর। কারন যখন কোন কিছু মার্ক করা হয় তখন ঐ শব্দটার উপর আগ্রহ ও আকর্ষণ বেড়ে যায়। পাশাপাশি এর উপর ব্রেইনের ভিজ্যুয়াল ইফেক্টও বেড়ে যায়। ফলে মনে রাখতে সুবিধা হয়।

যখন কোন কিছু মার্ক করা হয় তখন ঐ শব্দটার উপর আগ্রহ ও আকর্ষণ বেড়ে যায়। তাই পড়ার সময় কালার পেন দিয়ে দাগ দিয়া পড়া উচিত । 

moon light

৭) বিকালের পরে বা সন্ধ্যায় পড়াশুনা করা উচিত: বিভিন্ন ডাক্তারি গবেষণায় দেখা গেছে, সকাল ১০ টার আগে মানুষের ব্রেইন পুরোপুরি ক্রিয়াশীল হয় না। এই সময়ের পর থেকে ধীরে ধীরে ব্রেইনের ক্রিয়াশীলতা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে বিকালের পরে ব্রেইনের ক্রিয়াশীলতা বেশি বাড়ে। তাই সকালে পড়ার থেকে বিকালে বা সন্ধ্যার পরে পড়া বেশি কার্যকর।

৮) পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে: ব্রেইন মূলত স্মৃতি তৈরীর কাজটা করে ঘুমের ভেতর। গবেষণায় দেখা গেছে, সারা দিনের কাজ ও ঘটনাগুলো ঘুমের সময়েই মেমরিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে যেকোন তথ্য (ইনফর্মেশন) মেমরিতে রূপান্তর করতে চাইলে পড়া-লেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।

আনন্দ ও কষ্টের বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের এক ধরনের আকর্ষণ কাজ করে।

৯) নিমনিক (mnemonic) ব্যবহার করা: নিমনিক (mnemonic) মানে হচ্ছে মনে রাখার বিশেষ কৌশল। আমাদের ব্রেইন অগোছালো কিছুর চাইতে কৌশলে সাজানো বিষয়ের উপর বেশি মনোযোগ দিতে পারে।

ফলে কোন কিছু ছক বা টেবিল আকারে সাজিয়ে নিলে কিংবা নিমনিক (mnemonic) তৈরী করে নিলে দ্রুত মেমোরি তৈরী হয় ও মনে থাকে।

meditation

১০) বার বার পড়তে হবে: আমাদের ব্রেইনে ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিগুলো (শর্ট টার্ম মেমরি) তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে (লং টার্ম মেমরী) রূপান্তরিত হয় যখন এটা ইমোশনাল হয় (সুখের বা কস্টের) বা বার বার ইনপুট দেয়া হয় (অর্থাৎ রিপিটেশন করা হয়)।

সারা দিনের কাজ ও ঘটনাগুলো ঘুমের সময়েই মেমরিতে রূপান্তরিত হয়।

বারবার ইনপুট দিলে ব্রেইনের মেমরি ট্রি অর্থাৎ স্মৃতি গঠনের স্থানে স্থায়ী গাঠনিক পরিবর্তন (স্ট্রাকচারাল চেইঞ্জ) হয়। আর এই স্ট্রাকচারাল চেইঞ্জের ফলেই স্থায়ী বা পার্মানেন্ট মেমরি তৈরী হয়।

জীবন থেকে ব্যর্থতাকে দূর করার সহজ উপায় কি জানতে চান ?

About the author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Latest posts

  • জাকারবার্গ এবং ফেসবুকের গল্প | কীভাবে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন

    জাকারবার্গ এবং ফেসবুকের গল্প | কীভাবে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন

    বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। আমরা অনেকেই মার্ক জাকারবার্গ এর ফেসবুকের গল্প জানি । একটি ছোট্ট রুম থেকে সারা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পরে সকল ভাষাভাষী মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাসকে বদলে দিয়েছে ফেসবুক । কি ভাবে মার্ক জাকারবার্গ করলেন এটা ? আপনি কি জানেন জাকারবার্গকে তার স্বপ্নের জন্য কি কি ত্যাগ করতে…

    Read more

  • বিয়ার গ্রিলসের হার না মানা গল্প

    বিয়ার গ্রিলসের হার না মানা গল্প

    ডিসকভারি চ্যানেলে ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠানটি দেখেননি এমন লোক কমই পাওয়া যাবে । অনুষ্ঠানটি যার কারণে সারা বিশ্বে এতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে তিনি হচ্ছেন এডওয়ার্ড মাইকেল বিয়ার গ্রিলস (Bear Grylls) । সবার কাছে বিয়ার গ্রিলস নামেই পরিচিত। তিনি একাধারে একজন লেখক, টেলিভিশন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, সাবেক সেনা কমান্ডো ও বর্তমানে বিশ্ব স্কাউট সংস্থার চীফ অব স্কাউট ।…

    Read more

  • সেরা নেতৃত্বের জন্য নেলসন ম্যান্ডেলার ১০ টি  উক্তি

    সেরা নেতৃত্বের জন্য নেলসন ম্যান্ডেলার ১০ টি উক্তি

    নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় রাষ্ট্রনায়কদের একজন, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়ে বহু বর্ণ ভিত্তিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।  আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, প্রখর রসবোধ, তিক্ততা ভুলে বৈরি প্রতিপক্ষের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়ার মত উদারতা এবং তাঁর বর্ণাঢ্য ও নাটকীয় জীবন কাহিনী—এসব মিলিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন এক জীবন্ত কিংবদন্তী । আব্রাহাম…

    Read more